শিল্পী জীবন হলো মানুষের ভালোবাসার জীবন: ঈশিতা

সাক্ষাতকার

রুমানা রশিদ ঈশিতা টেলিভিশন নাটকের অন্যতম দর্শকপ্রিয় একজন  অভিনেত্রী। টিভি নাটকে তার পথচলা অনেক বছরের। বলতে গেলে একটি প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। অবশ্য আগের মতো এখন নাটক বেশি না করলেও মাঝে মাঝে কিছু কাজ করে আলোচনায় থাকেন এই অভিনেত্রী। সম্প্রতি ‘ইতি মা’ নাটকে অভিনয় করে নতুন করে আলোচনায় এসেছেন।

দীর্ঘ অভিনয় জীবনে ঈশিতার রয়েছে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। বিাটভির বহুল প্রশংসিত ও আলোচিত নাটকে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তার। তারকা অভিনেত্রী ঈশিতার জন্মদিন আজ। জন্মদিন এবং অন্যান্য বিষয় নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন ঈশিতা।

আপনাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা?

ঈশিতা: বিশেষ দিনে আমাকে মনে করার জন্য দ্য ডেইলি স্টারকে এবং দ্য ডেইলি স্টারের পাঠকদের ধন্যবাদ।

কীভাবে কাটছে আজকের বিশেষ দিনটি? এদিন ঘিরে কোনো স্মৃতি যদি শেয়ার করেন…

ঈশিতা: খুব সুন্দরভাবে কাটছে। সকাল থেকে প্রচুর ফোন রিসিভ করছি। সবাই জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। এ ছাড়া, ফেসবুকে অনেকে  উইশ করছেন। এটা আমার জন্য ভীষণ আনন্দের। সারাদিন বাসায় থাকছি। রাতে মায়ের বাসায় যাব। মা রান্না করছেন। ডিনার করবো সেখানে। আর মনে রাখার মতো অনেক স্মৃতিই তো আছে। একটি শেয়ার করি- স্কুল জীবনে আমার প্রতিটি জন্মদিনের সময় পরীক্ষা থাকত। এজন্য খুব মন খারাপ লাগত আমার। একবার মা আমাকে না বলে স্কুলের কাছের দুই বন্ধুকে বাসায় ডাকেন। তারপর তাদের নিয়ে জন্মদিন পালন করেন। তাদেরও পরের দিন পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষা থাকার পরও শুধু আমার মন ভালো করার জন্য ওরা এসেছিল বলে দিনটি আজও আমার কাছে স্মরণীয় হয়ে আছে।

একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী আপনি, কিন্তু কাজ কমিয়ে দেওয়ার পরও এত এত মানুষের ভালোবাসা পাওয়াটাকে কীভাবে দেখেন?

ঈশিতা: আমি মনে করি মানুষের ভালোবাসা পাওয়ার মতো বড় আর কিছু নেই। মানুষ আমাকে এতটা ভালোবাসেন, এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি কি আর হতে পারে? কাজ কম বা বেশি বড় কথা নয়। ভালো কাজের সংখ্যাটা কতটা সেটাই বড় কথা। দর্শকরা কিন্ত ভালো কাজটাকে মনে রাখেন। এখনো কাজ করতে চাই, কিন্ত ভালো কাজ হতে হবে।

টিভি নাটকে লম্বা জার্নি আপনার, সেই অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাই…

ঈশিতা: বিটিভি থেকেই আমার শুরু। এক সময় বিটিভিতে অনেক কাজ করেছি। প্যাকেজ আসার পরও অনেক কাজ করেছি। বিটিভিতে গেলে নস্টালজিক হয়ে পড়ি। বিটিভিকে মিস করি অনেক। বিটিভির সবরকমের সুব্যবস্থার কথা বলতেই হয়। সবকিছু বদলায়। আমরাও বড় হচ্ছি। কাজের পরিধি বেড়েছে। লম্বা জার্নির পেছনে ফিরে তাকালে অনেক কথা মনে পড়ে। কত অভিজ্ঞতা একজীবনে হয়েছে কাজ করতে গিয়ে। এটুকু বলব- শিল্পী জীবন হলো মানুষের ভালোবাসার জীবন। কাজ দিয়ে মানুষের মাঝে বেঁচে থাকা যায়।

দর্শকরা  আপনাকে অনেক মিস করেন, তা বিশ্বাস করেন?

ঈশিতা: অবশ্যই। আমিও দর্শকদের মিস করি। তাদের জন্যই মাঝে মাঝে কাজ করি। এজন্য ভালো স্ক্রিপ্টের অপেক্ষায় থাকি। আসলে জীবনের প্রায়োরিটি তো বদলে যায়। জীবন তো চলমান। আমার দুই সন্তান। তাদের জন্য অনেক সময় বের করতে হয়। সবকিছুর পরও দর্শকদের মিস করার কথা ভেবে আমিও সময় বের করি। আমিও তাদের মিস করি।

গত ঈদে  ‘ইতি মা’ এত সুন্দর একটি মানবিক গল্পের নাটকে কাজ করেছেন, যা সব মহলে প্রশংসিত হয়েছে…

ঈশিতা: এক কথায় যদি বলি, তাহলে বলব ‘ইতি মা’ নাটকে কাজ করার অভিজ্ঞতা অনেক ভালো। ভীষণ ভালো অভিজ্ঞতা হয়েছে। পরিচালক আশফাক নিপুনের সঙ্গে আমার প্রথম কাজ এ নাটকটি দিয়ে। নিপুন বিগত বছরগুলোতে ভালো ভালো নাটক উপহার দিয়েছে। তার সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছে ছিল। এবার হয়েছে। লকডাউনের আগেই কাজটি করেছি। সব মিলিয়ে সুন্দর অভিজ্ঞতা হয়েছে।

সাধারণ টিভি নাটকে আমরা গল্প সংকট দেখি, সেখানে এই নাটকটির শক্তিশালী গল্প ভালো নাটকের বেলায় কতটা বড় ভূমিকা রাখবে?

ঈশিতা: আসলে এটা ধার করা কোনো গল্প নয় । এটি চারপাশের পরিচিত গল্প। আমার আপনার জীবনের গল্প । এজন্য কাজটি করে আরও ভালো লেগেছে। একটি নাটকের মূল জায়গা হচ্ছে গল্প। গল্প ভালো হলেই শিল্পীরা ভালো অভিনয় করতে পারেন। সেটা এই নাটকে ছিল। গল্প সংকট বিষটি আমাদের থেকে  গেছে। কাজেই এরকম ভালো ভালো গল্পের নাটক বেশি বেশি হলে আমাদের নাটকের উপকার হবে।

এখনকার কাজগুলো দেখেন? কেমন লাগে?

ঈশিতা: দেখি। গেল ঈদের নাটকের কথা যদি বলি, দশ থেকে বারোটি নাটক আমি দেখেছি। যা ছিল সমৃদ্ধ টিভি নাটক। গল্প প্রধান নাটক ছিল। নাটকের গল্পটা আসল। তারপর পরিচালনা এবং অভিনয়। নাটকের গল্প শক্তিশালী হলে দর্শকরা অবশ্যই দেখবেন। এই ধরণের কাজ বেশি বেশি চাই। তাহলে দর্শক ফিরে আসবে।

Source: https://www.thedailystar.net/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *